
কিছুদিন খুব প্রোডাক্টিভ থাকি…
কিছুদিন খুব প্রোডাক্টিভ থাকি…
আবার কিছুদিন শয়তান এমনভাবে ধরে ফেলে—সব কেমন এলোমেলো হয়ে যায়।
জিকির, দোয়া, তিলাওয়াত… সব থেকে কেমন যেন সরে যাই।
মনটা খালি খালি লাগে। আত্মা শুকিয়ে যেতে চায়।
আপনাদের সাথেও কি এমন হয়?
সবকিছুতে আলসেমি চলে আসে। আল্লাহর কাছে ফিরতে চাইলেও যেন ফিরে আসার পথটা খুঁজে পাই না।
ঠিক তখনই আল্লাহ তায়ালা তাঁর অসীম করুণায় বারবার আমাকে মনে করিয়ে দেন—
“তুমি আমারই বান্দা, আমি তোমার রব। আমি ছাড়া তুমি কিছুই না।”
যখন নিজের গুনাহ নিজেই আমাকে পুড়িয়ে ফেলে।
যখন নিজেকে নিয়ে ঘৃণা জন্মায়, তখনই মনে পড়ে—
“আল্লাহ আমাকে এখনো ডাকছেন… আমি চাইলে ফিরে যেতে পারি।”
কোনো এক অদৃশ্য ভালোবাসার টানে, আবার ফিরে আসি…আবার নিজেকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করি। বেশ প্রডাক্টিভ বানিয়ে ফেলি নিজেকে।
এভাবেই হয় হিদায়াত
-আল্লাহ কষ্ট দেন, কিন্তু তা ছিন্নভিন্ন করার জন্য না—বরং ভেঙে আবার গড়ে তোলার জন্য।
-ভুল করান, যেন আমরা তাওবাহ শিখি, নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝি।
-ঠেকিয়ে দেন, যেন খুব বেশি এগিয়ে গিয়ে হারিয়ে না যাই।
এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোর মাঝেই আমি আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি অনুভব করি।
এই কষ্ট, এই ভুল, এই থেমে যাওয়াগুলো… এটাই আমার কাছে হিদায়াত।
এটাই আল্লাহর ভালোবাসার প্রকাশ।
কারণ, তিনি জানেন—আমি কখনোই খুব গর্বিত, খুব ব্যস্ত, খুব আত্মতৃপ্ত অবস্থায় ফিরে যাব না
।আমি ফিরি তখনই—যখন তিনি আমাকে “নরম” করে দেন।
তুমি যদি এখন একেবারে শূন্য বোধ করো…
তোমার কান্না যদি তোমাকে রাতে ঘুমোতে না দেয়…
তোমার ভুলগুলো যদি তোমাকে জ্বালায়…
তাহলে বুঝে নিও—আল্লাহ তোমাকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন।
তোমাকে থামিয়ে দিচ্ছেন, যেন তুমি আবার তাঁর দিকে তাকাও।
হেদায়েতের পথে ফিরে আসতে:
১. আত্মসমালোচনা ও অনুতাপ করুন নিজের অন্তরে ফিরে তাকান—কি কারণে এই দূরত্ব তৈরি হলো? এটা শয়তানের ফাঁদ, নাকি নিজের অলসতা? “তাওবাহ” করুন—আল্লাহ কখনো অনুতপ্ত বান্দাকে ফিরিয়ে দেন না।
২. ছোট ছোট আমল দিয়ে শুরু করুন হঠাৎ দীর্ঘ কিয়ামুল লাইল বা অনেক ঘন্টা ইবাদাতে ফিরে যাওয়া কঠিন। তাই: • দিনে ৫ মিনিট কুরআন তিলাওয়াত • প্রতিদিন ৩টি করে জিকির • প্রতিদিন একবার “আস্তাগফিরুল্লাহ” বলা
৩. নিয়মিত সালাত ঠিক করুন—even if শুরুতে মন না থাকে সালাত হলো হিদায়াতের মূল চাবিকাঠি। মনোযোগ না এলেও নামাজ ছাড়বেন না। একসময় হৃদয় ফিরে আসবে ইনশাআল্লাহ।(আমি রিসেন্টলি একটা Salah Tracker নিয়েছি)
৪. ভালো পরিবেশ তৈরি করুন আপনার চারপাশের বন্ধুবান্ধব, সোশ্যাল মিডিয়া, সময়ের ব্যয়—সব যেন আপনাকে আল্লাহর দিকে ডাকে। ভালো বন্ধু, ইসলামি বই, হালাল লেকচার—এসব আপনাকে উৎসাহ দেবে।
৫. দু’আ করতে থাকুন—সবচেয়ে বেশি এই দু’আটা বলুন: “ইহদিনাস্ সিরাতাল মুস্তাকিম” (হে আল্লাহ, আমাদের সোজা পথে চালাও)
৬. নিজেকে সময় দিন, কিন্তু আলস্য করবেন না ফিরে আসাটা একদিনেই হবে না। তবে আপনি চেষ্টা করছেন, আল্লাহ জানেন। তাঁর রহমত সীমাহীন। আপনি এক কদম এগুলে, আল্লাহ দশ কদম এগিয়ে আসেন।
৭. নতুন করে উদ্দেশ্য ঠিক করুন
কেন আপনি ইবাদাত করতে চান? ভয় না ভালোবাসা? জান্নাত না জাহান্নামের ভয়?
লক্ষ্য হোক: আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য আমি ইবাদাত করতে চাই। তখন ইবাদাত শুধু দায়িত্ব না, হয়ে যাবে আনন্দ।
হেদায়াত মানে নিখুঁত হওয়া না। হেদায়াত মানে—ভুল করলেও, বারবার আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়া।
যতবার ছিটকে পড়ি, আবার ততবার ফিরে আসব।
কারণ, আল্লাহ কখনো ক্লান্ত হন না আমাদের ডাক শুনতে।
যদি এখন আপনি একটু গাফেল হয়ে থাকেন, তাহলে জেনে রাখুন—এটাও হেদায়াতেরই এক ধাপ, কারণ আপনি বুঝতে পারছেন যে আপনি আল্লাহ থেকে দূরে আছেন।
এখন শুধু ফিরে আসার সময়।
হে আল্লাহ, আপনার প্রিয় আমাদের ইখলাস দিন, ইস্তিকামাহ দিন, এমন হৃদয় দিন—যা সবসময় তোমারই দিকে ফিরে আসে।